সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
শুক্রবার কেবলমাত্র অল্প কয়েকটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তবে এর মধ্যে কয়েকটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। স্বাভাবিকভাবেই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ননফার্ম পেরোল এবং বেকারত্বের হার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের দিকে দৃষ্টি থাকবে, তবে এটি উল্লেখ করাও জরুরি যে, এই সপ্তাহে প্রকাশিত সব মার্কিন প্রতিবেদনের ফলাফলই হতাশাজনক ছিল।
অতএব, দুটি উপসংহার টানা যায়:
- আজকের প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনের ফলাফলও হতাশাজনক হতে পারে।
- মার্কেটের ট্রেডাররা আজকের ননফার্ম পেরোল এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলোও উপেক্ষা করতে পারে, যেমনটি এই সপ্তাহের অন্যান্য প্রতিবেদনগুলোর ক্ষেত্রে করেছে।
ইউরোজোনে আজ ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) প্রকাশিত হবে, তবে মার্কেটে কার্যত এর তেমন কোনো গুরুত্ব নেই। প্রথমত, এটি কেবলমাত্র এপ্রিলের দ্বিতীয় অনুমান। দ্বিতীয়ত, ইউরোপীয় ইউনিয়নে মুদ্রাস্ফীতি এখন লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছেছে, তাই এটি আর মার্কেট সেন্টিমেন্টে বিশেষ প্রভাব ফেলছে না।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ ছাড়া এখন আর কোনো মৌলিক বিষয় নিয়ে আলোচনার কিছু নেই — যদিও বাণিজ্য যুদ্ধে আপাতত বিরতি নেয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। যতদিন ট্রাম্প নতুন করে শুল্ক আরোপ করবেন বা বিদ্যমান শুল্ক বাড়াবেন, ততদিন ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে। বাণিজ্য উত্তেজনা বৃদ্ধি পেলে ডলার আরেক দফা দরপতনের শিকার হতে পারে। অন্যদিকে, উত্তেজনা প্রশমিত হলে ডলার সমর্থন পাবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট চীনের প্রতি তার অবস্থান কিছুটা নমনীয় করেছেন, তবে এখনো বাস্তবিক অর্থে পরিস্থিতি বদলায়নি। এবং ট্রাম্পকে যতটুকু আমরা চিনি, তিনি যদি আবারও শুল্ক বাড়িয়ে দেন — এতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
ট্রাম্প ভালোভাবেই জানেন যে, আরও শুল্ক বৃদ্ধি করা হলে মার্কিন অর্থনীতি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তাই স্বল্পমেয়াদে নতুন করে বাণিজ্য উত্তেজনা বৃদ্ধি দেখার সম্ভাবনা কম। একই সময়ে, চীনের সঙ্গে কোনো বাণিজ্য চুক্তি প্রণয়নের আলোচনা চলছে না, অর্থাৎ "145%–125%" শুল্ক এখনো বহাল রয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে বুধবার দেখেছি, ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির প্রতি মার্কিন অর্থনীতি কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।
উপসংহার:
সপ্তাহের শেষ দিনের ট্রেডিংয়ে, উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে। ইউরোর মূল্য এখনো রেঞ্জের মধ্যেই থাকতে পারে, ফলে 1.1275 লেভেল থেকে একটি রিবাউন্ডের ফলে নতুন একটি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হতে পারে। ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য এখনো অনেক বেশি ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, যদিও এটি টানা তিন দিন ধরে দরপতনের শিকার হয়েছে।
৯০% সম্ভাবনা রয়েছে যে সামষ্টিক প্রেক্ষাপট ট্রেডারদের সেন্টিমেন্টে তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে, যদি ট্রেডাররা আজকের প্রতিবেদনের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখানোর সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে মার্কেটে ডলার বিক্রির সম্ভাবনা খুবই বেশি থাকবে বলে ধারণা করা যায়।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।