মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের পুরোপুরিভাবে ফ্ল্যাট ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে। পুরো দিনের মধ্যে ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি বা কোনো ইভেন্টও ছিল না, ফলে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের অবসানের কোনো বাস্তব সম্ভাবনাও তৈরি হয়নি। একমাত্র প্রত্যাশা ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি নতুন করে কোনো শুল্ক আরোপ করেন বা অন্য কোনো বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নেন। তবে গত তিন সপ্তাহ ধরে ট্রাম্প বাণিজ্য সংঘাতকে আর বাড়িয়ে তোলেননি এবং বর্তমানে তিনি চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর চাপ সৃষ্টি করে নিজের শর্তে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের পথ খুঁজছেন। ফলে এখন ডলারের দরপতনের নতুন কোনো কারণ নেই, তবে ডলারের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার কারণও খুব সীমিত—বিশেষ করে যখন মার্কেটের ট্রেডাররা প্রায় ৯০% সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন উপেক্ষা করছে। আজ সন্ধ্যায় ফেডের আসন্ন বৈঠকের ফলাফল প্রকাশিত হবে, তবে এখানে বিশেষ কোনো চমক থাকার সম্ভাবনা নেই—সুদের হার অপরিবর্তিত থাকবে বলেই প্রত্যাশা করা হচ্ছে। কেবল প্রেস কনফারেন্সে এমন কোনো বক্তব্য আসতে পারে যা মার্কেটে অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
মঙ্গলবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে মাত্র একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে, এবং সেটিও রাতের বেলায়। এই পেয়ারের মূল্য সাইডওয়েজ চ্যানেলের নিচের সীমানা থেকে রিবাউন্ড করে, যা ৫ মিনিটের চার্টে 1.1275–1.1292 এর মধ্যে ছিল। এরপর সারাদিন ধরে মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, তবে যেহেতু সিগন্যালটি রাতের বেলায় গঠিত হয়েছিল, তাই অধিকাংশ ট্রেডার সেটি কাজে লাগাতে পারেননি।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা এখনো বজায় রয়েছে। একই সময়ে, গত তিন সপ্তাহ ধরে এই পেয়ারের মূল্য উচ্চ লেভেলের কাছাকাছি সাইডওয়েজ রেঞ্জেই আটকে আছে। সামগ্রিকভাবে মার্কেটে এখনো মার্কিন ডলারের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব বজায় রয়েছে, তবে যদি ট্রাম্প বাণিজ্য সংঘাত প্রশমিত করার দিকে অগ্রসর হন, তাহলে ডলার আবারো শক্তিশালী হতে পারে। এটি কবে হবে বা আদৌ হবে কি না, সেটি এখনো অনিশ্চিত।
বুধবার আবারো এই পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে, কারণ এখনো পর্যন্ত মার্কেটের মুভমেন্ট অনেকাংশে ট্রাম্পের বিবৃতি ও সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। যেহেতু সম্প্রতি ট্রাম্পের পক্ষ থেকে খুব একটা নতুন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি, তাই আমরা মনে করি মূল্যের ফ্ল্যাট থাকার প্রবণতা এখনো অব্যাহত থাকবে। রেঞ্জের নিচের সীমা (1.1275) থেকে রিবাউন্ড হওয়ার ফলে এই পেয়ারের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, তবে সন্ধ্যায় ফেডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, তারপর পরিস্থিতি বদলাতে পারে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হচ্ছে: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1091, 1.1132–1.1140, 1.1189–1.1191, 1.1275–1.1292, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622, 1.1666, 1.1689। বুধবার ইউরোজোনে কেবলমাত্র খুচরা বিক্রয় প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা সম্ভবত মার্কেটে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে না। যুক্তরাষ্ট্রে ফেডের বৈঠকের ফলাফল প্রকাশিত হবে, তবে সেটির প্রভাবেও বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া না দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমরা আজও এই পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট মুভমেন্ট অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করছি।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।