বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার GBP/USD পেয়ারের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের কারেকশন প্রচেষ্টা পর্যন্ত দেখা যায়নি। যেখানে ইউরোজোন ও জার্মানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচকের ফলাফলের প্রভাবে ইউরোর মূল্যের বিয়ারিশ প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো অনুঘটক ছিল না। হ্যাঁ, ইউরোজোনের মতো যুক্তরাজ্যের উৎপাদন সংক্রান্ত PMI প্রতিবেদনের ফলাফলও প্রত্যাশার তুলনায় দুর্বল ছিল, তবে পরিষেবা খাতের ফলাফল পাউন্ডকে সমর্থন দিয়েছে। তাছাড়া, বর্তমানে পরিস্থিতিতে পাউন্ডকে "বাঁচানোর" বিশেষ কোনো প্রয়োজনও দেখা যাচ্ছে না।
ব্রিটিশ কারেন্সির মূল্য এখন বিটকয়েনের মতো স্থিতিশীল এবং প্রায় কোনো কারেকশন ছাড়াই বাড়ছে। বর্তমানে পাউন্ডের মূল্য 1.3443 এর আশেপাশে অবস্থান করছে, যা সেই সাইডওয়েজ চ্যানেলের ওপরের সীমানার কাছাকাছি, যেখানে এক মাস ধরে এই পেয়ারের ট্রেড করা হচ্ছে। আমরা মনে করি মূল্য এই লেভেলটি ব্রেক করলে এবং পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন এই পেয়ারের মূল্যের বর্তমান দিকনির্দেশনা নিশ্চিত করছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বৃহস্পতিবার 5-মিনিটের টাইমফ্রেমে বেশ কয়েকটি সিগন্যাল গঠিত হয়েছে, তবে সেগুলোর কোনোটিই খুব বেশি কার্যকর ছিল না। সমস্যা ছিল, পুরো দিনজুড়ে এই পেয়ারের মূল্যের সাইডওয়েজ মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। ট্রেডারদের কাছে 1.3421–1.3443 জোনের ব্রেক ঘটানোর মতো পর্যাপ্ত মোমেন্টাম ছিল না—বিশেষ করে যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের মাঝারি মানের ফলাফল এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনের তুলনামূলকভাবে ইতিবাচক ফলাফল প্রেক্ষাপটে। উপরন্তু, এই পেয়ার বিক্রির জন্য কোনো উল্লেখযোগ্য কারণও ছিল না। ফলে, মূল্য এই জোন থেকে একাধিকবার রিবাউন্ড করেছে, কিন্তু কোনো উল্লেখযোগ্য দরপতন হয়নি।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখনো ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত কার্যক্রম দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে এবং ট্রেডারদের মধ্যে তার নীতিমালার প্রতি সংশয়ী মনোভাব বজায় রয়েছে। মনে রাখতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্ক হ্রাস—দুটি বিষয়ই মূলত ডলারের পক্ষে কাজ করার কথা। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সুদের হার হ্রাস এবং ফেড সুদের হার অপরিবর্তিত রাখলেও সেটি ডলারের জন্য সহায়ক হওয়া উচিত। অথচ আমরা উল্টো পরিস্থিতি দেখছি—মার্কেটের ট্রেডাররা ডলারের ক্ষেত্রে ৯০% ইতিবাচক বিষয় উপেক্ষা করছে।
শুক্রবার আবারও মূলত টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর ওপর ভিত্তি করে এই পেয়ারের ট্রেডিং করা হবে। মার্কেটের ট্রেডাররা হয়তো ডলার বিক্রির জন্য যেকোনো অজুহাত খুঁজবে বা নতুন প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করবে। প্রতিদিনের মতোই মার্কেটের সার্বিক পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে বর্তমানে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3421–1.3443, 1.3537, 1.3580–1.3598
শুক্রবার যুক্তরাজ্যে খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তবে এটি ট্রেডারদের মধ্যে চলমান "সর্বদা কিনুন" মনোভাবের ওপর প্রভাব ফেলবে বলে মনে হচ্ছে না। ২৩ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউজ ক্যালেন্ডার একেবারেই ফাঁকা।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।