সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
বৃহস্পতিবার খুবই কম সংখ্যক সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। জার্মানি, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোজোনে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে না। শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে জিডিপি এবং বেকারভাতা আবেদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। জিডিপি প্রতিবেদনটি হবে প্রথম প্রান্তিকের দ্বিতীয় অনুমান, যা বস্তুগতভাবে তিনটি অনুমানের মধ্যে সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ। বেকারভাতা আবেদন সংক্রান্ত প্রতিবেদনে যদি পূর্বাভাসের তুলনায় প্রকৃত ফলাফল বড় ধরনের বিচ্যুতি না দেখা যায়, তাহলে তা মার্কেটে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে না — আর এই ধরনের বিচ্যুতি খুব কমই ঘটে থাকে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
বৃহস্পতিবারের ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টগুলোর মধ্যে ফেডারেল রিজার্ভের প্রতিনিধিদের—থমাস বারকিন, অস্টান গুল্সবি, অ্যাড্রিয়ানা কুগলার এবং ম্যারি ডেলি—বক্তব্যগুলোর কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। তবে, আমরা পূর্বেও বলেছি, বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বক্তব্য মার্কেটে তেমন কোনো প্রভাব ফেলছে না, কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর নীতিমালা ও দৃষ্টিভঙ্গি মোটামুটি ১০০% স্পষ্ট। মার্কেটের ট্রেডাররা এখন কেবল "ট্রাম্পের পদক্ষেপের" ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করছে। সম্প্রতি ফেডের অনেক সদস্য বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতের মুদ্রানীতির দিক নিয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন। সারসংক্ষেপে, তারা অর্থনৈতিক সূচকগুলোতে ট্রাম্পের শুল্কের পূর্ণ প্রভাব প্রতিফলিত হওয়ার অপেক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। গতকাল প্রকাশিত ফেডের মিনিটেও এই দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিত হয়েছে।
আমাদের বিশ্বাস, মার্কেটের ট্রেডারদের জন্য এখনো একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বাণিজ্য যুদ্ধ, যা ধীরে ধীরে প্রশমিত হলেও এখনো চলমান রয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণা দিয়ে চলেছেন, তবে এসব তথ্য ডলারকে খুব বেশি সহায়তা করতে পারেনি। যদি বেশিরভাগ দেশের সঙ্গে চুক্তিগুলো চূড়ান্ত না হয় অথবা আলোচনা দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে। এমনকি ট্রাম্প নতুন করে কোনো শুল্ক আরোপ না করলেও তার গৃহীত নীতিমালার প্রতি মার্কেটের ট্রেডারদের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং মনোভাবের কারণে ডলারের দরপতন চলমান থাকতে পারে।
উপসংহার:
সপ্তাহের শেষ দিনের আগের দিনে, উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের (EUR/USD এবং GBP/USD) নিম্নমুখী মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, কারণ এটি এখন একটি টেকনিক্যাল কারেকশন বলে মনে হচ্ছে। একই সময়ে, আমরা ডলারের মূল্যের স্থায়ী বৃদ্ধির কোনো উল্লেখযোগ্য কারণ দেখতে পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে, উভয় পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আপাতত সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, বিশেষ করে যখন বাণিজ্য যুদ্ধে নতুন করে কোনো উত্তেজনা বৃদ্ধির ইঙ্গিত নেই। তবে, আমরা এটাও বলতে পারছি না যে, বাণিজ্য যুদ্ধ প্রশমনেরও সুস্পষ্ট কোনো লক্ষণ রয়েছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।