ইউরোর ট্রেডের বিশ্লেষণ এবং টিপস
যখন MACD সূচকটি শূন্যের উপরের দিকে উঠতে শুরু করেছিল তখন এই পেয়ারের মূল্য 1.1438 এর লেভেল টেস্ট করেছিল, যা ইউরো কেনার জন্য একটি সঠিক এন্ট্রি পয়েন্ট নিশ্চিত করে। তবে, মূল্য ১০ পিপস ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পরেই এই পেয়ারের ওপর আবারও চাপ ফিরে আসে।
মার্কিন উৎপাদন খাতের ISM সূচকের হতাশাজনক ফলাফল ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সম্ভাবনা এবং ফেডারেল রিজার্ভের ভবিষ্যৎ মুদ্রানীতি পুনর্মূল্যায়নের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ট্রেডাররা এখন প্রত্যাশা করছে যে ভবিষ্যতে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা আরও বেড়েছে, যা ডলারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে—বিশেষ করে যইখন এই মুদ্রাটি ঐতিহ্যগতভাবে সুদের হারের পূর্বাভাস পরিবর্তনের প্রতি সংবেদনশীল। তবুও, এটাও বিবেচনায় রাখা উচিত যে ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি স্বল্পস্থায়ী হতে পারে এবং এটি শুধুমাত্র নতুন মাসের শুরুতে সাধারণ টেকনিক্যাল ইম্পাল্সিভ মুভমেন্ট হতে পারে। ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কের কারণে ইউরোজোনের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং পূর্বাভাস এখনো অনিশ্চিত রয়ে গেছে।
আজ দিনের প্রথমার্ধে ইউরোজোনের মে মাসের CPI (মূল মুদ্রাস্ফীতির সূচক) এবং বেকারত্বের হার সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এই অর্থনৈতিক সূচকগুলো ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং ইউরোপীয় অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি ও ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভবিষ্যতে কী ধরনের মুদ্রানীতি অনুসরণ করতে পারে সে সম্পর্কে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করবে—বিশেষ করে এই পটভূমিতে যে ইসিবি হয়তো এই বৃহস্পতিবার সুদের হার হ্রাসের চক্রের সমাপ্তি টানতে পারে। যদি CPI বা ভোক্তা মূল্য সূচক প্রত্যাশার চেয়ে বেশি আসে, তাহলে ইসিবির উপর আরও কঠোর অবস্থান নেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি হতে পারে, যা ইউরোর জন্য সহায়ক হবে। বিপরীতে, CPI বা ভোক্তা মূল্য সূচক প্রত্যাশার চেয়ে কম এলে সুদের হার কিছু সময়ের জন্য অপরিবর্তিত রাখার যুক্তি দুর্বল হবে এবং ইউরোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
বেকারত্বের হারও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বেকারত্বের হার কমে গেলে তা শ্রমবাজারে উন্নতির ইঙ্গিত দেয় এবং বাহ্যিক অস্থিতিশীলতার প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ইউরোজোনের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নির্দেশ করে। বিপরীতে, বেকারত্ব বাড়লে তা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাওয়ার শঙ্কা সৃষ্টি করতে পারে এবং ইউরো দুর্বল হতে পারে। সুতরাং, আজ ইউরোজোন থেকে প্রকাশিতব্য মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদন ইউরোর ওপর তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। এই প্রতিবেদনগুলোর দিকে বিনিয়োগকারীরা নিবিড়ভাবে নজর রাখবে যাতে তারা ইউরোপীয় অর্থনীতির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা এবং ইসিবির সম্ভাব্য পদক্ষেপ সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে পারে। পূর্বাভাসের তুলনায় প্রকৃত ফলাফল যেকোনো অপ্রত্যাশিত বিচ্যুতি কারেন্সি মার্কেটে উল্লেখযোগ্য অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
দৈনিক কৌশল হিসেবে আমি মূলত পরিকল্পনা #1 এবং #2 বাস্তবায়নের দিকে মনোযোগ দিব।
বাই সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: আজ যখন ইউরোর মূল্য 1.1464-এর লেভেলে বৃদ্ধির লক্ষ্যে 1.1429-এর (চার্টে সবুজ লাইন দ্বারা চিহ্নিত) লেভেলে পৌঁছাবে, তখন আপনি ইউরো কিনতে পারেন। মূল্য 1.1464-এর লেভেলে গেলে, আমি লং পজিশন ক্লোজ করার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 30-35 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে ইউরোর শর্ট পজিশন ওপেন করব। আজ শুধুমাত্র আসন্ন প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল প্রকাশিত হলে ইউরোর দর বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ! এই পেয়ার কেনার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের উপরে রয়েছে এবং সেখান থেকে উপরের দিকে উঠতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: আজ MACD সূচকটি ওভারসোল্ড জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.1410-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রে আমি ইউরো কেনার পরিকল্পনা করছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে ঊর্ধ্বমুখী করবে। আমরা 1.1429 এবং 1.1464-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দর বৃদ্ধির প্রত্যাশা করতে পারি।
সেল সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: EUR/USD পেয়ারের মূল্য চার্টে লাল লাইন দ্বারা চিহ্নিত 1.1410-এর লেভেলে পৌঁছানোর পর আমি ইউরো বিক্রি করার পরিকল্পনা করছি। লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.1380-এর লেভেল, যেখানে মূল্য পৌঁছালে আমি সেল পজিশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 20-25 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে ইউরোর বাই পজিশন ওপেন করব। মুদ্রাস্ফীতি তীব্রভাবে হ্রাস পেলে আজ এই পেয়ারের উপর চাপ ফিরে আসতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ! বিক্রি করার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের নিচে রয়েছে এবং শূন্যের নিচে নামতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: MACD সূচকটি ওভারবট জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.1429-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রেও আমি আজ ইউরো বিক্রি করতে যাচ্ছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে নিম্নমুখী করবে। আমরা 1.1410 এবং 1.1380-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দরপতনের আশা করতে পারি।
চার্টে কী আছে:
- হালকা সবুজ লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট ক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় সবুজ লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্দেশ করে, কারণ এই লেভেলের উপরে আরও দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।
- হালকা লাল লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট বিক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় লাল লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে, কারণ এই লেভেলের নিচে আরও দরপতনের সম্ভাবনা নেই।
- মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার সময় ওভারবট এবং ওভারসোল্ড জোন মূল্যায়নের জন্য MACD সূচক ব্যবহার করা উচিত।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
- নতুন ফরেক্স ট্রেডারদের মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মূল্যের তীব্র ওঠানামা এড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক প্রতিবেদন প্রকাশের আগে মার্কেটে এন্ট্রি না করাই উত্তম। যদি আপনি সংবাদ প্রকাশের সময় ট্রেডিং করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে লোকসানের সম্ভাবনা হ্রাসের জন্য অবশ্যই স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করুন। স্টপ-লস অর্ডার ছাড়া ট্রেডিং করলে দ্রুত আপনার সম্পূর্ণ ডিপোজিট শেষ হয়ে যেতে পারে, বিশেষত যদি আপনি অর্থ ব্যবস্থাপনার নীতিমালা উপেক্ষা করেন এবং বেশি ভলিউমে ট্রেড করেন।
- মনে রাখবেন, সফল ট্রেডিংয়ের জন্য একটি সুসংগঠিত ট্রেডিং পরিকল্পনা থাকা আবশ্যক, ঠিক যেমনটি উপরে নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে সেটি দৈনিক ভিত্তিতে ট্রেড করা ট্রেডারদের জন্য লোকসানের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।