শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার রাতেই EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের তীব্র দরপতন ঘটে, যার পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে মূল্যের পুনরুদ্ধার হয়েছে। সুতরাং, পুরো দিনটিকে মূলত দুটি অংশে ভাগ করা যায়। প্রথম ভাগে, ডলারের দর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বৃদ্ধি পায় (যা বর্তমানে অত্যন্ত বিরল ঘটনা), এরপর মার্কেটের ট্রেডাররা বাস্তবতা অনুধাবন করে বুঝতে পারে আসলে কী ঘটেছে। ইরানের উপর ইসরায়েলের শক্তিশালী হামলার প্রতিক্রিয়ায় মার্কেটের ট্রেডারদের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক ছিল—তবে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। আগে এমন ঘটনা ঘটলে, বিশ্বব্যাপী ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার সময় ডলারের দর সবসময়ই বেড়ে যেত। এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরণের বিষয় কাজ করছে এবং ডলারকে আর "নিরাপদ বিনিয়োগ" হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে না। এ কারণেই মার্কেটের ট্রেডাররা শুরুতে আবেগপ্রবণ হয়ে ডলার কেনে এবং এরপর দ্রুত ডলারের মূল্য বিপরীতমুখী হয়ে মূল অবস্থানে ফিরে আসে—ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এটিই মনে হয় এই পরিস্থিতির একমাত্র কারণ।
মজার ব্যাপার হলো, ট্রাম্প তাৎক্ষণিকভাবে ইরানে হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার বিষয়টি অস্বীকার করেন, তবে একইসঙ্গে জানান যে তেহরান এখনো পারমাণবিক চুক্তিতে সম্মত হয়নি, যদিও তাদের সামনে এখনো সুযোগ রয়েছে। অতএব, আমরা সম্ভবত একটি নতুন সংঘাতের সূচনালগ্নে রয়েছি, যার উদ্যোক্তা এবারও "শান্তির দূত" ট্রাম্প—এবার তিনি ইরানকে বেছে নিয়েছেন।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে শুক্রবার বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে দৈনিক মুভমেন্ট বিশেষভাবে অনুকূলজনক ছিল না। প্রায় কোনোই সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি, এবং রাতেরবেলা ইরান-ইসরায়েল সামরিক সংঘাতের পর মার্কেট ইতোমধ্যে কিছুটা স্থবির হয়ে গিয়েছিল। সারাদিনে চারটি ট্রেডিং সিগন্যাল তৈরি হয়, প্রতিটি থেকেই গড়ে 15–20 পিপস লাভ নেওয়া সম্ভব হয়েছিল। যদিও কিছু সিগন্যাল নির্ভুলতার দিক থেকে আদর্শ ছিল না, তবুও কোনো ভুল সিগন্যাল দেখা যায়নি।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো অব্যাহত রয়েছে, যা ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বায়িত্ব গ্রহণের শুরুতেই শুরু হয়েছিল এবং মনে হচ্ছে যতদিন তিনি দায়িত্বে থাকবেন, তা চলতেই থাকবে। আসলে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট—এই একটি কারণই মার্কিন ডলারের ধারাবাহিক দরপতনের জন্য যথেষ্ট। এমনকি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাতের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাও মার্কিন মুদ্রার সামগ্রিক পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি—এটি শুধুমাত্র ট্রাম্পের কারণে হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এখনো হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন, আল্টিমেটাম দিচ্ছেন, শুল্ক আরোপ বা বৃদ্ধি করছেন এবং অন্যান্য উচ্চ-প্রভাবশালী পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তাই মার্কেটের ট্রেডাররা প্রতিদিন ডলার বিক্রি না করলেও, মধ্যমেয়াদে তাদের মধ্যে ডলার ক্রয়ের মনোভাবও দেখা যাচ্ছে না।
সোমবার ডলারের মূল্যের মুভমেন্টের পূর্বাভাস দেওয়া অত্যন্ত কঠিন। ইতোমধ্যে সপ্তাহান্তে ইরান ইসরায়েলের উপর পাল্টা হামলা চালিয়েছে, এবং সোমবার সকালে মার্কেটে ট্রেডিং শুরু হওয়ার আগে আরও কী কী ঘটতে পারে তা কল্পনা করাও কঠিন।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.1132–1.1140, 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1609, 1.1666, 1.1704, 1.1802। সোমবার কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট থাকবে না, এবং মার্কেটের ট্রেডাররা ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের সপ্তাহান্তে ঘটা ঘটনাগুলোর প্রতিক্রিয়ায় ট্রেড করবে—যদি ট্রাম্পের পক্ষ থেকেও নতুন কোনো বিবৃতি আসে, তবে সেগুলোও মার্কেটে প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।