GBP/USD পেয়ারের 5-মিনিটের চার্টের বিশ্লেষণ
শুক্রবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম অব্যাহত ছিল। ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের চলমান মুভমেন্ট ভালোভাবে বোঝার জন্য দৈনিক টাইমফ্রেমে নজর দেওয়া সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে। সেখানে আমরা একটি শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখতে পাচ্ছি, যা ঠিক সেই দিন থেকেই শুরু হয়েছে যেদিন ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসেন। তারপর থেকে আমরা এই পেয়ারের মূল্যের সর্বোচ্চ তিনটি স্বল্পমাত্রার কারেকশন দেখেছি। অন্যভাবে বলতে গেলে, পাউন্ডের দর প্রায় একটানা বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে উল্লেখযোগ্য কোনো বিরতি দেখা যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই লোয়ার টাইমফ্রেমে এই মুভমেন্ট একমুখী না-ও মনে হতে পারে। সেখানে মাঝেমধ্যে কারেকশন হয়েছে, যেগুলো কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছে। কিন্তু এই বিষয়গুলো মৌলিক প্রেক্ষাপটের বাস্তবতাকে বদলে দিতে পারেনি — ডলারের দরপতন অব্যাহত রয়েছে।
শুক্রবার এই পেয়ারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট দুর্বল এবং ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বহীন ছিল। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান থেকে প্রকাশিত জুন মাসের কনজিউমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্সের ফলাফল পূর্বাভাসের তুলনায় অনেক ভালো এসেছে। কিন্তু দিনের দ্বিতীয়ার্ধে ডলার কেবল দরপতনের শিকার হয়েছে, কারণ মার্কেটের ট্রেডাররা দ্রুত উপলব্ধি করে যে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন মুদ্রা কেনা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। এর ফলে রাতেরবেলা ডলারের মূল্য যে সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছিল তা বাকি সময়ে সম্পূর্ণরূপে মুছে যায়।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে তুলনামূলকভাবে এই পেয়ারের মূল্যের সাইডওয়েজ মুভমেন্টই বেশি দেখা গেছে, ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট নয়। তবুও, এই টাইমফ্রেমেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অক্ষুণ্ণ রয়েছে এবং ট্রেন্ড লাইন বা চ্যানেলের ব্রেকআউট এখন টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপট অনুযায়ী তেমন কোনো গুরুত্ব বহন করছে না।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে শুক্রবার দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। এই পেয়ারের মূল্য ইচিমোকুর সেনকৌ স্প্যান বি এবং কিজুন-সেন লাইনের কাছ থেকে দু'বার বাউন্স করে। প্রথম মুভমেন্ট থেকে মাত্র 12 পিপস লাভ হয়, তাই ট্রেডাররা দ্বিতীয় বাই সিগন্যাল আসা পর্যন্ত লং পজিশনে থাকতে পারতেন। দ্বিতীয় ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টটি প্রথমটির তুলনায় বেশি শক্তিশালী ছিল, যদিও সেটিও তুলনামূলকভাবে দুর্বল হিসেবে বিবেচনা করা যায়। তবুও, এই একটি ট্রেড থেকেই অল্প পরিমাণে লাভ করা সম্ভব ছিল।
COT রিপোর্ট
ব্রিটিশ পাউন্ডের সর্বশেষ COT (কমিটমেন্ট অব ট্রেডার্স) রিপোর্টে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কমার্শিয়াল ট্রেডারদের সেন্টিমেন্ট ধারাবাহিকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। কমার্শিয়াল ও নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নেট পজিশন নির্দেশকারী লাল ও নীল লাইন ঘন ঘন একে অপরকে ছেদ করেছে এবং সাধারণত জিরো লেভেলের কাছাকাছি অবস্থান করেছে। এই দুই লাইন এখনো একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থান করছে, যার মানে হলো বাই ও সেল পজিশনের মধ্যে আনুমানিকভাবে ভারসাম্য বজায় রয়েছে। তবে গত দেড় বছরে নেট পজিশনে বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ট্রাম্পের গৃহীত নীতিমালার কারণে ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকায় মার্কেট মেকারদের দিক থেকে পাউন্ডের চাহিদা এই মুহূর্তে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। যদি বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধ প্রশমিত হওয়ার ধারা ফের শুরু হয়, তবে ডলার আবারও মূল্য বৃদ্ধি প্রদর্শনের সুযোগ পেতে পারে। ব্রিটিশ পাউন্ডের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, "নন-কমার্শিয়াল" গ্রুপ 7,400টি বাই কন্ট্রাক্ট ওপেন করেছে এবং 9,000টি সেল কন্ট্রাক্ট ক্লোজ করেছে। ফলে সাপ্তাহিক রিপোর্ট অনুযায়ী নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নিট পজিশন 16,400 ইউনিট বেড়েছে—যা একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি।
সাম্প্রতিক সময়ে পাউন্ডের মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, তবে এর পেছনে একটিই কারণ রয়েছে—সেটি হচ্ছে ট্রাম্পের গৃহীয় নীতিমালা। এই প্রভাব যদি কোনোভাবে নিরপেক্ষ হয়ে যায়, তবে ডলার পুনরুদ্ধার করতে পারে। কিন্তু সেটি কবে ঘটবে? তা কেউ জানে না। ট্রাম্প এখনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছেন। সামনে চার বছরে আরও কত চমক অপেক্ষা করছে কে জানে?
GBP/USD পেয়ারের 1 ঘন্টার চার্টের বিশ্লেষণ
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো অটুট রয়েছে, যদিও মূল্য অ্যাসেন্ডিং চ্যানেল এবং ট্রেন্ডলাইনের নিচে কনসোলিডেট করছে। মার্কিন ডলারের মূল্যের আবারও সামান্য কারেকশন হয়েছে, যখন মার্কেটের ট্রেডাররা মধ্যমেয়াদে সময়ে ডলার ক্রয় করার দিকেই মনোযোগী ছিল। মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা তাত্ত্বিকভাবে ডলারকে সহায়তা করতে পারে, তবে আমরা মনে করছি না যে বাস্তবে তেমন কিছু ঘটবে। টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে এই পেয়ারের দরপতনের কোনো কারণ দেখা যাচ্ছে না—না ঘন্টাভিত্তিক চার্টে, না ৪-ঘণ্টা বা দৈনিক চার্টে।
16 জুন ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.2981–1.2987, 1.3050, 1.3125, 1.3212, 1.3288, 1.3358, 1.3439, 1.3489, 1.3537, 1.3637–1.3667, 1.3741। সেনকৌ স্প্যান B (1.3514) এবং কিজুন-সেন (1.3543) লাইনগুলোও সিগন্যালের উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে। যখন মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকে 20 পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করবে, তখন ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত। ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের লাইনগুলো দিনেরবেলা অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, তাই ট্রেডিং সিগন্যাল নির্ধারণের সময় তা অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে।
সোমবার যুক্তরাজ্য কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। তবে আমাদের বিশ্বাস, দিনের বেলায় ট্রেডাররা মানসিকভাবে উত্তেজিত এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকবে, যার ফলে এই পেয়ারের মূল্যের তীব্রভাবে ওঠানামা এবং ঘন ঘন রিভার্সাল দেখা যেতে পারে।
চিত্রের ব্যাখা:
- মূল্যের সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল – গাঢ় লাল লাইন; যেখানে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে। তবে এগুলো সরাসরি ট্রেডিং সিগন্যাল নয়।
- কিজুন সেন ও সেনকৌ স্প্যান বি লাইন – শক্তিশালী ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের লাইন, যা ৪-ঘণ্টা চার্ট থেকে ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে স্থানান্তর করা হয়েছে।
- এক্সট্রিম লেভেল – হালকা লাল লাইন; যেখানে পূর্বে মূল্য রিবাউন্ড করেছে। এগুলো ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে।
- হলুদ লাইন – ট্রেন্ড লাইন, ট্রেন্ড চ্যানেল এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল প্যাটার্ন নির্দেশ করে।
- COT ইন্ডিকেটর 1 – চার্টে প্রতিটি গ্রুপের ট্রেডারদের নিট পজিশনের পরিমাণ প্রদর্শন করে।