GBP/USD পেয়ারের 5-মিনিটের চার্টের বিশ্লেষণ
সোমবার, প্রত্যাশিতভাবেই, GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যও ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে।
সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে এই পেয়ারের মূল্যের তুলনামূলকভাবে সাইডওয়েজ মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে, তবে একই সঙ্গে এই পেয়ারের মূল্য খুব একটা কমেওনি এবং নিয়মিতভাবে স্থানীয় এবং তিন বছরের মধ্যে মূল্যের সর্বোচ্চ লেভেল আপডেট করে চলেছে। ফলে, ট্রেডারদের মনোভাব ও মার্কেটের মুভমেন্ট ধরন মূলত অপরিবর্তিত রয়েছে।
সোমবার মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ পরিস্থিতির তীব্রতা আরও বৃদ্ধি পাওয়ায় ডলারের আরও একবার দরপতন হয়েছে। আগে এমন ধরনের পরিস্থিতিতে, মার্কিন ডলার সাধারণত শক্তিশালী হতো, কারণ এটি দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারীদের কাছে "নিরাপদ বিনিয়োগ" হিসেবে বিবেচিত ছিল। তবে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি বদলে গেছে। এখন, সামান্য প্ররোচনাতেই ডলারের দরপতন ঘটে: ট্রাম্পের নতুন কোনো উচ্চ-প্রভাবশালী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন? ডলার দরপতনের শিকার হয়। শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা এসেছে? আবারও ডলারের দরপতন হয়। ফেড সুদের হার অপরিবর্তিত রাখে, আর অন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদের হার কমায়? ডলার দুর্বল হয়। নতুন কোনো ভূ-রাজনৈতিক সংঘাত শুরু হয়েছে? ডলারের আরও দরপতন হয়।
সোমবার কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট ছিল না—তবে তার প্রয়োজনও হয়নি। ইউরোপীয় এবং মার্কিন সেশনের বেশিরভাগ সময়জুড়ে এই পেয়ারের মূল্য আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে একমুখী গতিতে এগিয়েছে।
গতকাল একটি মাত্র ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল—তবে এটি থেকেই যথেষ্ট মুনাফা করা সম্ভব হয়েছে। ইউরোপীয় সেশন শুরুর ঠিক আগে, মূল্য 1.3537–1.3543 এরিয়ার কাছ থেকে বাউন্স করে এবং সারাদিনজুড়ে ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট বজায় থাকে। ফলে বাই সিগন্যালটি অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল, এবং সন্ধ্যায় ম্যানুয়ালি লং পজিশন ক্লোজ করলে প্রায় 50 পিপস পর্যন্ত লাভ করার সম্ভব ছিল। যেদিনটি "একঘেয়ে সোমবার" হতে পারত, সেদিনই বরং ভালো ফলাফল এসেছে।
COT রিপোর্ট
ব্রিটিশ পাউন্ডের সর্বশেষ COT (কমিটমেন্ট অব ট্রেডার্স) রিপোর্টে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কমার্শিয়াল ট্রেডারদের সেন্টিমেন্ট ধারাবাহিকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। কমার্শিয়াল ও নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নেট পজিশন নির্দেশকারী লাল ও নীল লাইন ঘন ঘন একে অপরকে ছেদ করেছে এবং সাধারণত জিরো লেভেলের কাছাকাছি অবস্থান করেছে। এই দুই লাইন এখনো একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থান করছে, যার মানে হলো বাই ও সেল পজিশনের মধ্যে আনুমানিকভাবে ভারসাম্য বজায় রয়েছে। তবে গত দেড় বছরে নেট পজিশনে বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ট্রাম্পের গৃহীত নীতিমালার কারণে ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকায় মার্কেট মেকারদের দিক থেকে পাউন্ডের চাহিদা এই মুহূর্তে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। যদি বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধ প্রশমিত হওয়ার ধারা ফের শুরু হয়, তবে ডলার আবারও মূল্য বৃদ্ধি প্রদর্শনের সুযোগ পেতে পারে। ব্রিটিশ পাউন্ডের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, "নন-কমার্শিয়াল" গ্রুপ 7,400টি বাই কন্ট্রাক্ট ওপেন করেছে এবং 9,000টি সেল কন্ট্রাক্ট ক্লোজ করেছে। ফলে সাপ্তাহিক রিপোর্ট অনুযায়ী নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নিট পজিশন 16,400 ইউনিট বেড়েছে—যা একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি।
সাম্প্রতিক সময়ে পাউন্ডের মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, তবে এর পেছনে একটিই কারণ রয়েছে—সেটি হচ্ছে ট্রাম্পের গৃহীয় নীতিমালা। এই প্রভাব যদি কোনোভাবে নিরপেক্ষ হয়ে যায়, তবে ডলার পুনরুদ্ধার করতে পারে। কিন্তু সেটি কবে ঘটবে? তা কেউ জানে না। ট্রাম্প এখনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছেন। সামনে চার বছরে আরও কত চমক অপেক্ষা করছে কে জানে?
GBP/USD পেয়ারের 1 ঘন্টার চার্টের বিশ্লেষণ
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনো GBP/USD পেয়ারের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা বজায় রয়েছে, যদিও মূল্য অ্যাসেন্ডিং চ্যানেল ও ট্রেন্ডলাইনের ব্রেক করে নিম্নমুখী হয়েছে। মার্কিন ডলারের আবারও কেবল সামান্য কারেকশন হয়েছে, এবং মার্কেটের ট্রেডাররা এখনও মধ্যমেয়াদে এই পেয়ার ক্রয় করাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক সংঘাতও ডলারকে সহায়তা দিতে পারেনি, ফলে ডলার এখনো নির্ভরযোগ্য কোনো সহায়তা পাচ্ছে না। অবশ্য, যদি বাণিজ্য যুদ্ধের পরিস্থিতি বিপরীত দিকে মোড় নেয় এবং ট্রাম্প শুল্ক প্রত্যাহার করে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করা শুরু করেন, তাহলে ডলারের পরিস্থিতি বদলাতে পারে। তবে বর্তমানে এমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
17 জুন ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.3050, 1.3125, 1.3212, 1.3288, 1.3358, 1.3439, 1.3489, 1.3537, 1.3637–1.3667, 1.3741। সেনকৌ স্প্যান B (1.3514) এবং কিজুন-সেন (1.3547) লাইনগুলোও সিগন্যালের উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে। যখন মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকে 20 পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করে, তখন ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের লাইনগুলো দিনেরবেলা অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, তাই ট্রেডিং সিগন্যাল নির্ধারণের সময় এটি অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে।
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে কোনো ফান্ডামেন্টাল ইভেন্ট বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রকাশনা নির্ধারিত নেই, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে—ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাকশন এবং রিটেইল সেলস। এই দুটি প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ হলেও, ভূ-রাজনীতি, রাজনীতি এবং বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাবের তুলনায় এগুলোর প্রভাব কম থাকবে বলেই আমরা ধারণা করছি। ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের কিছুটা কারেকশন হতে পারে, তবে নিচের দিক থেকে এটি ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের লাইন থেকে সহায়তা পাচ্ছে।
চিত্রের ব্যাখা:
- মূল্যের সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল – গাঢ় লাল লাইন; যেখানে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে। তবে এগুলো সরাসরি ট্রেডিং সিগন্যাল নয়।
- কিজুন সেন ও সেনকৌ স্প্যান বি লাইন – শক্তিশালী ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের লাইন, যা ৪-ঘণ্টা চার্ট থেকে ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে স্থানান্তর করা হয়েছে।
- এক্সট্রিম লেভেল – হালকা লাল লাইন; যেখানে পূর্বে মূল্য রিবাউন্ড করেছে। এগুলো ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে।
- হলুদ লাইন – ট্রেন্ড লাইন, ট্রেন্ড চ্যানেল এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল প্যাটার্ন নির্দেশ করে।
- COT ইন্ডিকেটর 1 – চার্টে প্রতিটি গ্রুপের ট্রেডারদের নিট পজিশনের পরিমাণ প্রদর্শন করে।